কবি ও ঔপন্যাসিক বেন ওকরি ১৯৫৯ সালে উত্তর
নাইজেরিয়ার মিন্নায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সালে
পরিবারের সঙ্গে নাইজেরিয়ায় ফিরে আসার আগে তিনি লন্ডনে
বেড়ে ওঠেন। তাঁর প্রথম দিককার কথাসাহিত্যের বেশিরভাগই
নাইজেরিয়ার গৃহযুদ্ধে তিনি যে রাজনৈতিক সহিংসতা প্রত্যক্ষ
করেছিলেন তার প্রতিফলন ঘটেছে। নাইজেরিয়া সরকারের
অনুদান পেয়ে তিনি ইংল্যান্ডের এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক
সাহিত্য পড়ার সুযোগ পেয়ে নিজ দেশ ছেড়েছিলেন।
আমি মূলত লিখি সত্যের জন্য, সৌন্দর্যের জন্য, ন্যায়বিচারের
জন্য, পরিহাসের জন্য, উদ্ভাবনের জন্য, আনন্দের জন্য, বিশ্বকে
পরিবর্তন করতে, কখনও রুখতে, কখনও প্রকাশ করতে, প্রশ্ন
করতে, আবিষ্কার করতে… বেন ওকরি
নাইজেরীয় সাহিত্যিক বেন ওকরির সাক্ষাৎকার
অনুবাদ: আদনান সহিদ
ওকরি ১৯৮৩-১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ওয়েস্ট আফ্রিকা
ম্যাগাজিনের কাব্য সম্পাদক ছিলেন এবং ১৯৮৩-১৯৮৫
সালে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের হয়ে নিয়মিত সম্প্রচার
করতেন। ১৯৯১ সালে তিনি কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে
ক্রিয়েটিভ আর্টসে ‘ফেলো কমনার’ নিযুক্ত হয়ে ঐ পদে
১৯৯৩ সাল পর্যন্ত অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯৮৭ সালে
তিনি রয়্যাল সোসাইটি অফ লিটারেচারের ফেলো হন
এবং ওয়েস্টমিনস্টার (১৯৯৭) ও এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়
(২০০২) থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ইংলিশ সেন্টার
অফ ইন্টারন্যাশনাল পেন-এর সহ-সভাপতি, রয়েল ন্যাশনাল থিয়েটারের
বোর্ডের সদস্য বেন ওকরি ২০০১ সালে ‘ওবিই’ পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি
লন্ডনে বসবাস করেন।
ওকরি’র প্রথম দুটি উপন্যাস, ফ্লাওয়ার্স অ্যান্ড শ্যাডোজ (১৯৮০) এবং দ্য
ল্যান্ডস্কেপস উইদিন (১৯৮১) উভয়ই নাইজেরিয়ার প্রেক্ষাপটে রচিত যেখানে
কেন্দ্রীয় চরিত্রের দুই যুবককে তাদের নিজ পরিবার ও দেশে ঘটে যাওয়া
বিচ্ছিন্নতা এবং বিশৃঙ্খলার সাথে লড়াই করতে দেখা যায়। তাঁর পরবর্তী
দুটি গল্প সংকলন, ইনসিডেন্টস অ্যাট দ্য শ্রাইন (১৯৮৬) এবং স্টারস অফ
দ্য নিউ কারফিউ (১৯৮৮) লাগোস এবং লন্ডনের প্রেক্ষাপটে লেখা হয়েছে।
১৯৯১ সালে ‘দ্য ফ্যামিশড রোড’ উপন্যাসের জন্য ওকরি কথাসাহিত্যে
বুকার পুরস্কার লাভ করেন। নাইজেরিয়ার একটি গ্রামের প্রেক্ষাপটে লেখা
তাঁর উপন্যাস ত্রয়ীর এটি প্রথম যা ‘আজারো’ নামে এক আত্মিক শিশুর গল্প
বলে। পরবর্তীতে ‘সংস অফ এনচ্যান্টমেন্ট’ (১৯৯৩) এবং ‘ইনফাইনাইট
রিচ’ (১৯৯৮) উপন্যাসেরও এই আজারোর বর্ণনা অব্যাহত রয়েছে। বেন
ওকরির অন্যান্য উল্লেখষোগ্য কথাসাহিত্যের মধ্যে রয়েছে অ্যাস্টোনিশিং
দ্য গডস (১৯৯৫), ২০০০ সালে প্রিমিও পালমি (ইতালি) পুরস্কারে ভূষিত
ডেঞ্জারাস লাভ (১৯৯৬), ইন আর্কেডিয়া (২০০২), স্টারবুক (২০০৭),
দ্যা এজ অব ম্যাজিক (২০১৪), দ্যা ফ্রিডম আর্টিস্ট (২০১৯) এবং এভ্রি
লিফ আ হালেলুযাহ (২০২১)।
তাঁর আইএ-এর কবিতা সংকলন, অ্যান আফ্রিকান এলিজি, ১৯৯২ সালে
এবং মহাকাব্যিক কবিতা সংকলন, মেন্টাল ফ্লাইট ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত
নাইজেরীয় সাহিত্যিক বেন ওকরির সাক্ষাৎকার হয়।
১৯৯৭ সালে ‘আ ওয়ে অফ বিইং ফ্রি’ নামে একটি প্রবন্ধ সংকলন
প্রকাশ করেন বেন। টেলস অফ ফ্রিডম (২০০৯)-এ ওকরি কবিতা এবং
গল্পকে সমন্বিত করেছেন। ইন এক্সিলাস নামে একটি নাটকও লিখেছেন তিনি।
গত জুন, ২০২৩ সালে প্রকাশিত টাইগার ওয়ার্ক শিরোনামে জলবায়ু
পরিবর্তন সম্পর্কিত গল্প, প্রবন্ধ ও কবিতার মর্মস্পর্শী ও সময়োপযোগী
সংকলনে বেন ওকরি প্রকৃতির জাদু এবং পরিবেশ রক্ষার প্রয়োজনীয়তা
তুলে ধরেন। অনুবাদিত কণ্ঠস্বরের আন্তর্জাতিক ইংরেজি পেন ম্যাগাজিন,
পেন ট্রান্সমিশন-এর কাছে দেওয়া এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে সেই টাইগার
ওয়ার্ক সংকলন, জলবায়ু সংকট, তাঁর লেখালেখির ধরন ও উদ্দেশ্য এবং
ভবিষ্যতের জন্য আমরা কী রেখে যাচ্ছি ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত
করেছেন তিনি। ‘গল্পকার’ পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি ইংরেজি থেকে
বাংলায় অনুবাদ করেছেন আদনান সহিদ।
প্রশ্ন: আমার সাথে আলাপের জন্য ধন্যবাদ। আপনার স্বল্পদৈর্ঘ্য রচনা
সংকলন, ‘টাইগার ওয়ার্ক’-এর সাথে জলবায়ু সংকটের এক দারুণ সঙ্গতি
লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জানতে আগ্রহী-কখন,কিভাবে এবং কেন এই সংকলনটি
প্রকাশের চিন্তা আসে এবং এই প্রকাশনার জন্য সাম্প্রতিক সময়কে বেছে
নেবার কারণ কি?
বেন: উল্লেখ্য সঙ্গতির উদ্ভব হয়েছে রচনাটি প্রকাশের গভীর উদ্দেশ্য থেকে।
অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম ঠিক কিভাবে এই বিশাল ও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুটাকে
তুলে ধরা যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে, জলবায়ু সংকট আমাদের মাঝে শঙ্কা
জাগিয়ে তোলার পাশাপাশি তা এড়ানোর উপায়ও বাতলে দেয়। এ সংকট
মূলত বেশ ভয়াবহ, দুঃস্বপ্ন জাগানিয়া ও দুর্বোধ্য। ফলে, সাহিত্যের সমস্ত
ক্ষমতা দিয়ে সংকট মোকাবেলার উপায় বরাবরই আমার চিন্তায় ছিল।
জলবায়ু সংকটের বৈচিত্রময় রূপ ও এর অন্তর্নিহিত ক্ষমতাকে ব্যবহার করে
পাঠককে জলবায়ু সংকটের এক জ্যামিতিক পরিভ্রমণে নিয়ে যেতে চেয়েছি।
প্রশ্ন: আপনার রচনা বেশ কিছু খন্ডিতাংশের সমন্বয়ে গড়ে উঠলেও তাদের
কাঠামো বিন্যাসে এবং পংক্তি গঠনে সংক্ষিপ্ততার ছাপ লক্ষণীয়। বিশেষত
আপনার কবিতায় মুষ্টিমেয় শব্দে গঠিত দীর্ঘ লাইনের উপস্থাপন দেখা যায়।
এই ধরনের ফর্ম এবং ফর্মের সংক্ষিপ্ততা সম্পর্কে কিছু জানতে চাই।
নাইজেরীয় সাহিত্যিক বেন ওকরির সাক্ষাৎকার
বেন: আমাদের হাতে খুব বেশি সময় নেই। জলবায়ু সংকট
সময়কে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে। সংকট উত্তরণের
সাথে পরিবেশকে তার আপন গতিতে ফিরিয়ে আনতে
সময়ের নগণ্য ব্যবধান রয়েছে। আপনার উল্লেখিত ফর্ম
এবং সংক্ষিপ্ততা আমাদের সেই সময় স্বল্পতাকে নির্দেশ
করে। তাই জরুরি বিষয়টি উপস্থাপনে দীর্ঘ রূপের ব্যবহার
আমার কাছে অদ্ভুতুড়ে ও অনুপযুক্ত মনে হয়। সংকটের
অস্তিত্বগত প্রকৃতির কারণে নিজ লেখন পদ্ধতিকে প্রশ্নের
সম্মুখীন করতে বাধ্য হয়েছি। আমার এক প্রবন্ধে বর্জ্যবিহীন লেখার কথাও
উল্লেখ আছে। লেখার সঙ্গে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর একটা মেলবন্ধন থাকা
উচিত যেমন: সত্য, সরলতা, বিশেষ ধরনের স্পার্টান সৌন্দর্য, আবেগ,
ভালবাসা, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ইত্যাদি।
প্রশ্ন: জলবায়ু সংকট আপনার লেখায় সবসময়ই প্রাধান্য পেয়েছে। এর কারণ?
বেন : প্রকৃতির প্রতি, আমরা যে বাতাসে শ্বাস নিচ্ছি তার প্রতি, দূষণের প্রতি,
শোষণের প্রতি, বন উজাড়ের প্রতি বরাবরই সংবেদনশীল ছিলাম। কতিপয়
সমালোচকের দাবি অনুযায়ী, ‘স্টারস অফ দ্য নিউ কারফিউ’ শিরোনামের
ভলিউমের অন্তর্গত ‘হোয়াট দ্য ট্যাপস্টার স’ নামে আমার একটি গল্প
‘পেট্রোফিকশন’ (পেট্রোলিয়াম ও পরিবেশে এর প্রভাব সম্পর্কিত সাহিত্য)
বলে এক বিশেষ ঘরানার সূচনা করেছিল। তবে সম্প্রতি জলবায়ু সংকটের
সম্মুখীন হবার প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে অনুভব করি যা মোকাবেলা করা
নিঃসন্দেহে কঠিন। এ সংকট নান্দনিকতার সীমাবদ্ধতা হ্রাস করে। মনে
প্রশ্ন জাগে, কেউ যদি পরিবেশ বিষয়ে লেখালিখি করলেও তা কি শিল্প হতে
পারে? আমি এর ইতিবাচক উত্তর পেলাম। ঠিক তাই, এটি আগুনের মতো
জ্বলন্ত এক শিল্পই হবে।
এখনকার তুলনায় খুব পুরনো এক স্নাতকোত্তর গবেষণার কথা মনে পড়ছে
যেখানে ‘হোয়াট দ্য ট্যাপস্টার’স, এবং ‘পেট্রো-ম্যাজিক-রিয়েলিজম’ নিয়ে
আলোচনা করেছিলাম। আপনি উপরে যে সময় সংক্ষিপ্ততার কথা উল্লেখ
করেছেন সেই একই কারণে গবেষণাটিকে বেশ সেকেলে মনে হয়; গবেষণাটি
জলবায়ু সম্পর্কিত লেখার বস্তুগত অবস্থানের তুলনায় এর নান্দনিকতা নিয়ে
অপেক্ষাকৃত বেশি আগ্রহী ছিল; শিল্পই কেবল প্রাধান্য পেয়েছিল সেখানে,
নাইজেরীয় সাহিত্যিক বেন ওকরির সাক্ষাৎকার
শিল্প ও এর প্রজ্জ্বলিত আগুন-উভয়টিই নয়।
প্রশ্ন: এই প্রেক্ষিতে গত কয়েক দশক বিবেচনায় আপনার লেখালিখির
উদ্দেশ্য কি পরিবর্তন হয়েছে? (যদি আমি সেই পুরানো সীমাবদ্ধ প্রশ্নটি
এড়িয়ে লেখককে ‘কেন লেখেন?’ তা জিজ্ঞাসা করি যার উত্তরে তিনি
অবশ্যই ‘কারণ আমি একজন লেখক-দুঃখিত!’ বলবেন না।)
বেনঃ নিজে কীভাবে পরিবর্তিত হই কিংবা অপরিবর্তিত থাকি তার উপরেই
আসলে নির্ভর করে লেখার উদ্দেশ্য পরিবর্তন বা অপরিবর্তন। আমি মূলত
লিখি সত্যের জন্য, সৌন্দর্যের জন্য, ন্যায়বিচারের জন্য, পরিহাসের জন্য,
উদ্ভাবনের জন্য, আনন্দের জন্য, বিশ্বকে পরিবর্তন করতে, কখনও রুখতে,
কখনও প্রকাশ করতে, প্রশ্ন করতে, আবিষ্কার করতে…
প্রশ্ন: কোনও এক মাধ্যমেও ‘গণসচেতনতার একটি আমূল পদক্ষেপের’
প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেছেন যা আমাদেরকে নির্বাক, নিষিক্রয়, অবিবেচক
জলবায়ু বিপর্যয়ের পথ থেকে সরিয়ে দেবে। পদক্ষেপটি আপনার দৃষ্টিতে
কেমন হতে পারে? আর সাহিত্য ও গল্প বলার ক্ষেত্রে এর কোনও ভূমিকা
থাকবে বলে মনে করেন কি?
বেনঃ পদক্ষেপটি ঠিক কেমন হতে পারে ধারণা না থাকলেও এর কার্যকারিতা
উপ্লব্ধি করতে পারি। ব্লিটজের সময় যে সংহতি, সাহস এবং সচেতন
মনোভাব বজায় ছিল তার প্রতিফলন ঘটবে এতে। এটা হবে এমন এক
বিশ্ব যেখানে সবাই আমাদের দূষণ ও বর্জ্য হ্রাস করতে একত্রিত হবো।
এক নতুন সভ্যতার সূচনালগ্নের মতো আমরা সেখানে এমন কিছু করব না
যা কোন প্রজাতির মৃত্যুতে অবদান রাখবে। আমরা চিন্তাশীল এবং সচেতন
থাকব। আমাদের বাণিজ্য হবে সৃজনশীল, সরকার
কেবল জাতীয় স্বার্থে নয় বরং সমগ্র মানবতার স্বার্থে
কাজ করবে। আমাদের দোষ-গুণসহ জীবনকে আমরা
ভালবেসে যাব। শুধু সচেতন থাকব আমাদের কৃতকাজ
যাতে পৃথিবীর উপর সুন্দর প্রভাব ফেলে। এজন্য স্বার্থপর
এবং নির্বোধ হওয়া থেকে বিরত থাকব।
আমাদের একটা ভুল ধারণা যে ব্যক্তিগত এবং সামাজিক
পর্যায়ে দূষণ চালিয়ে গেলেও পরিবেশগত সমীকরণ
নাইজেরীয় সাহিত্যিক বেন ওকরির সাক্ষাৎকার ঠিকই থাকবে ।
আমরা এমন রাস্তার সন্ধিক্ষণে আছি যেখানে একটি পথ পৃথি
বীর সাথে আমাদের আত্মঘাতী সম্পর্ককে নরকে পর্যন্ত অব্যাহত রাখবে। আর
অপর পথটি নিয়ে যাবে বৃহত্তর মানবতার দিকে, একটি নতুন প্রজাতির নিকটে।
এখন এটাই কঠোর এক সিদ্ধান্ত। যখন আমরা জেনেই গেছি আমাদের কী
করতে হবে, তখন সেভাবেই এগিয়ে যাওয়া উচিত।আমার মতে, ভেতরকার
সেরাটি বের করে আনতে একটা সংকটের মুখোমুখি হওয়া প্রয়োজন। তবে
এমন সংকটে এতটা দেরিতেও জেগে উঠতে চাই না, যখন হাতে আর কিছুই
করার থাকবে না। সাহিত্যের ক্ষমতা রয়েছে চেতনা ঘটানোর-যা আমাদের
নিয়ে যেতে পারে, কোনো এক ভীষণ প্রান্তে, দেখাতে পারে নতুন পথ।সমস্ত
এই বিষয়গুলিকে বাস্তব করে তুলতে পারে সাহিত্য আর পারে আমাদের কল্পনা
ও ইচ্ছাকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে।
প্রশ্ন: আমার মতে, আপনার রচনা সংকলন, ‘টাইগার ওয়ার্ক’ নির্দেশ করে যে
আমরা যেভাবে ‘স্বাধীনতা-কে বিবেচনা করি কীভাবে তার পুরোটাই সংকলনটির
কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ধারণার উপর নির্ভরশীল এবং সেই ধারণাকে খর্ব করে।
পেন (চঊঘ) আন্দোলনের সাথে দীর্ঘ সম্পৃক্ততা থাকার সুবাদে জানতে চাই,
জলবায়ু সংকটের সামগ্রিকতা কীভাবে স্বাধীন মত প্রকাশের ধারণাসহ পড়া ও
লেখার এবং শোনা ও বলার স্বাধীনতা্কে ছেদ করে?
বেনঃ মত প্রকাশের স্বাধীনতার অভাবে প্রথম যে ক্ষতি সাধিত হয় তা জলবায়ু
বিষয়ক সক্রিয়তার কারণেই আইনে পরিণত হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে, আমাদের
এখন আর প্রতিবাদ করার অধিকার নেই। এখন যা করতে হবে তা হলো
সরাসরি মোকাবেলায় নেমে পড়া। দেখা যাচ্ছে যে, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে
যথাযথভাবে, প্রকৃত কথাগুলো বলার জন্য মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রয়োজন।
জলবায়ু সংকট ও (বাক)স্বাধীনতা পারস্পারিকভাবে সংযুক্ত।
প্রশ্ন: আপনার অধিকাংশ কাজই পৃথিবীর জন্য এবং অবশ্যই পৃথিবীতে আমরা
যা রেখে যাই সেগুলোর অনুসন্ধান করে বলে আমার বিশ্বাস। যাবার আগে
পৃথিবীর জন্য আসলে কী রেখে যেতে চান?
বেনঃ সত্যের, স্বচ্ছতার, সম্ভাবনার সৃজনশীল উদযাপন এবং বৃহত্তর এক
বাস্তবতার স্বপ্ন রেখে যেতে চাই যা মূলত আমাদের স্বাধীনতার পরিমাপক।