Description
আঁধারের-আলপনা
ভূমিকা
সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ-তালার জন্য। দরুদ ও সালাম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর এবং তাঁর পরিবারবর্গ ও তাঁদের অনুসারীগণের উপর।
‘আঁধারের আলপনা’ এটি একটি জীবনধর্মী বই। আমাদের দ্বীনের পথে, জীবনের বাঁকে বাঁকে হাজার সমস্যা জড়িয়ে আছে। সেই সব সমস্যাকে ঘিরেই ছোট্ট একটু প্রয়াস এই বইটি। প্রিয় পাঠক, আপনি নিশ্চয়ই জানেন মহান আল্লাহর কাছে এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ব্যাপার যে আমরা যা বলি তা না করেই অন্যকে উপদেশ দিই। যেকোনো উপদেশ অন্যকে দেয়ার আগে সেটা মানার চেষ্টা করা দরকার। যা আমি মানব না তা আমি বলব না এই নীতিতে চলা উচিত। আর পাঠককে অনুরোধ করব শত রকম অন্যায় জীবনে করে থাকলেও একটি কাজ আজ হতে বাদ দেয়া যায় কি না সেটা নিয়ে ভাবুন আর তা হলো কৌতুক করে মিথ্যা বলা। আমরা এ সময়ে সবকিছুতে মজা করতে ভালোবাসি। কিছু হলেই সবাই বলি ফান করছিলাম। আপনার মজা করে বলা কথা অন্যের মনে আঘাতের কারণ হতে পারে। অন্যকে মিথ্যা বলতে প্ররোচিত করতে পারে। অন্যের জীবনকে বিষাদে পরিপূর্ণ করতে পারে। তাই এমন কথা বলুন যা অন্যের হৃদয়ে লেগে থাকে, যা প্রশান্তিদায়ক হয়, যেন তা অন্যের হতাশা দুশ্চিন্তা দূর করতে পারে, যেন তা শুনে মানুষের মন প্রফুল্ল হতে পারে যে কথা মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে যা শুনে মানুষ ভুল পথ থেকে সঠিক পথে ফিরতে পারে। এজন্য প্রিয় পাঠক হাসিমুখে স্পষ্টভাবে সহজ কথা বলুন।
যাইহোক, আমার এই গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল চিরদিন প্রকাশনী হতে। বইটির তুমুল পাঠক জনপ্রিয়তা থাকলেও প্রকাশ করতে কিছুটা বিলম্ব হওয়ায় পাঠকদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আশা করি বইটি পাঠকের কাছে ভালো লাগবে ইন শা আল্লাহ। এই বইটির কোনো বাক্য যদি কারো কোনো উপকারে আসে, সেটিই হবে লেখকের জন্য অনেক বড় উপহার।
মহান আল্লাহ সকলকে আখেরাতে ও দুনিয়ায় নিরাপত্তা দান করুন।
সাফল্য
অনেকেই জীবনে সাফল্য লাভ করে। বলতে হবে সাফল্য আসলে কী? সাফল্যের সংজ্ঞা কী হতে পারে! এখানে দুটি ব্যাপারÑসমাজের মানুষ আপনাকে যে চোখে দেখে এবং আপনি সমাজকে যে চোখে দেখেন! সাফল্যের সাথে আপনার মন-মানসিকতা এবং আত্মতৃপ্তি জড়িত। সফলতা তখনই আসবে যখন সমাজের সবাই একটু আপনাকে ভিন্ন চোখে দেখবে! প্রকৃত সফলতা আসলে ভিন্ন কিছু। মানুষের চিন্তা-ভাবনা ঠিক করে দেয়, আসলে সফলতা কী! একজন অর্থকে ভালোবাসা মানুষ সারাটা জীবন ব্যয় করে সম্পদ আহরণে, তার কাছে সফলতা হলো পাহাড়সম অর্থের মালিক হওয়া! একজন দ্বীনদার ব্যক্তির কাছে সফলতার সংজ্ঞা হলো দুনিয়ার জীবন কাটিয়ে পারলৌকিক সাফল্য অর্জন কিংবা সবকিছুতে তার স্রষ্টার নৈকট্য অর্জন। মানুষের ভেতরের যে চালিকাশক্তি (মন-মানসিকতা) তা আসলে একজন ব্যক্তিকে পরিচালিত করে। যে মানুষের হৃদয় নদীর স্বচ্ছ জলের মতো, তার মন-মানসিকতাও তেমনি যে স্বচ্ছ হবে, তা সহজে অনুমেয়। আপনার মন-মানসিকতা ঠিক করে দেবে আপনি মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর সাথে কেমন আচরণ করবেন। আপনি যদি নিজেকে সবার চেয়ে বড় মনে করেন তাহলে দেখবেন কোনো না কোনোভাবে অন্যকে হেয় করে বসেছেন। আপনার নিজের ভেতরের মন-মানসিকতাকে উন্নত করতে শিখুন, দেখবেন সাফল্য আসবে। আমাদের চলার পথে নানান বাধা থাকবেই। সেই বাধাগুলো অতিক্রম করার মানসিকতা নিজেই নিজের মধ্যে তৈরি করতে হবে। সকল সময়ে নিজেকে অনুপ্রেরণা দিতে হবে। আর নিজেকে এই অনুপ্রেরণা দিতে হবে কয়লার মতো করে। আগুন সহজে নিভে যায় কিন্তু কয়লার আগুন বহু সময় ধরে জ্বলতেই থাকে! বেশিরভাগ সফল মানুষের সাফল্যটাকে আমরা বিচার করি সফলতা দিয়ে। আমরা দেখতে ভুলে যাই এই সফলতা অর্জন করতে তার কষ্টের প্রতিটি বিন্দুর গল্প কিংবা কখনোই জানা হয়ে ওঠে না আমাদের এই সফলতা অর্জন করতে মানুষটার কতবার নিজেকে অনুপ্রাণিত করতে হয়েছে! যাদের সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করার দুর্জয় মন-মানসিকতা রয়েছে, তারাই কেবল জীবনে সফলতা লাভ করতে পারেন।
আর যারা নেতিবাচক মানুষ তারা যেকোন বিপদে কিংবা প্রতিবন্ধকতায় হাল ছেড়ে দেন আর ভাগ্যকে দোষারোপ করেন। মানুষের সবচেয়ে প্রতিবন্ধকতা সে নিজেই। আপনার আশপাশের অনেক মানুষই আপনি কোনো উদ্যোগ কিংবা কোনো কাজ করতে গেলে বাধা দিতে পারে, বিপদের গল্প শোনাতে পারে! আপনার কাজ হলো তাদের কথা শোনা কিন্তু সিদ্ধান্ত নিজেকেই নেয়া। একই বিপদে পড়লে কেউ দিশেহারা হয়ে যায় আর কেউ ধৈর্যের সাথে বুদ্ধি দিয়ে প্রতিহত করে। একজন ইতিবাচক মনের অধিকারী মানুষ সকল সময়ে উদার ও ক্ষমাশীল হয়ে থাকেন এবং একই সাথে তারা ব্যাপক ধৈর্যের অধিকারী।
নেতিবাচক মানুষ তাদের দোষ যখন বড় করে দেখে তখনো তারা থাকে শান্ত। আর চরিত্রের এই সৌন্দর্য গড়ে তোলা কেবলই সম্ভব হয় ইতিবাচক মন-মানসিকতা দ্বারা।
Reviews
There are no reviews yet.