Sale!

বাংলাদেশের উর্দু ছোটগল্প

Original price was: ৳ 550.00.Current price is: ৳ 385.00.

Description

বাংলাদেশের উর্দু ছোটগল্প
 

বাংলাদেশের উর্দু ছোটগল্প

ভূমিকা
‘বাংলাদেশের উর্দু ছোটগল্প’ গ্রন্থের নাম দেখে অনেকে চমকে উঠবেন, হয়তো এটাই স্বাভাবিক। উর্দু কি বাংলাদেশে এখনো বেঁচে আছে? আমার জানা মতে কোন স্কুল কলেজে উর্দু পড়ানো হয় না কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উর্দু ও ফার্সি বিভাগ আছে। উর্দুভাষী জনগোষ্ঠী সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এবং পরিতাপের বিষয় তারাও উর্দু পড়ে না। এটা বড়ই স্বাভাবিক ব্যাপার যে ভাষা কোন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত নয়, যে ভাষা পড়ে কোন চাকরি পাওয়া যাবে না, সেই ভাষা শুধু শখের জন্য পড়ার কি কোন প্রয়োজন আছে? তবুও বাংলাদেশের মুষ্টিমেয় কিছু লোক এই ভাষার চর্চা করছেন। এখনো এই ভাষা সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত হয়ে যায়নি।
উর্দু উপন্যাস ‘মিরাতুল অরুস’ লেখক ডিপ্টি নাজির আহমেদ প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৬৯ সালে এবং এটার বাংলা অনুবাদ ছাপা হয়েছিল ২০ বছর পর ১৮৮৯ সালে। এটাই প্রথম উর্দু থেকে বাংলায় অনুবাদ।
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পরে প্রেমচন্দ, কৃষণ চন্দর, সা’দাত হাসান মান্টো, ইসমাত চুগতাই, খাজা আহমেদ আব্বাস, নাসিম হিজাযী এবং অনেকের গল্প বাংলা ভাষায় অনূদিত হলো। উর্দু কবিদের মধ্যে গালিব, ইকবাল, জোশ মালিহাবাদী এবং ফয়েজ আহমেদ ফয়েজকে বাংলা ভাষার পাঠকদের সাথে পরিচয় করানো হলো।
সে সময় যারা অনুবাদের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন, আতিয়ার রহমান, নাইমুল বশীর, বশীর আল হেলাল, রনেশ দাশ গুপ্ত, কাজী মাসুম এবং মুনিরউদ্দীন ইউসুফ। রনেশ দাশ গুপ্ত এবং মুনিরউদ্দীন ইউসুফ বেশি কবিতা অনুবাদ করেছেন। ষাটের দশকে রনেশ দাশ গুপ্ত, উর্দু কবি ফয়েজ আহমেদ ফয়েজের প্রেমবিষয়ক এবং আধুনিক কবিতা অনুবাদ করেন। তিনি জোশ মালিহাবাদীর বিদ্রোহীভাব সম্পন্ন কবিতাগুলো বাংলায় অনুবাদ করেন। অন্যদিকে মুনিরউদ্দীন ইউসুফ ১৯৬০ সালে কবি আল্লামা ইকবালের কবিতা এবং ১৯৬৪ সালে মির্জা গালিবের কবিতা অনুবাদ করেন।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে যারা আধুনিক উর্দু সাহিত্য বাংলা ভাষার পাঠকদের কাছে তুলে ধরেন তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেনÑ আসাদ চৌধুরী, জাফর আলম, আখতার উদ্দীন নবী, ফয়সাল মাহমুদ, হাসান শফী, সেলিম সিদ্দিকী, আইয়ূব হোসেন, হাসনাইন ইমতিয়াজ, আব্দুল হাই শিকদার, ইমরুল কায়েস, শাহাবউদ্দীন আহমেদ, গোলাম মোস্তফা এবং জাভেদ হুসেন। তারা বাংলাদেশের কিছু সংখ্যক উর্দু ভাষার লেখকদের গল্প বাংলায় অনুবাদ করেছেন যেমনÑ জয়নাল আবেদীন, গোলাম মোহম্মাদ, আয়ূব জওহর, এস এম সাজিদ, এবং আহমেদ সাদী। এই অনুবাদগুলো বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। অন্য দিকে কবি আসাদ চৌধুরী আর শাহাবউদ্দীন উর্দু কবি নওশাদ নূরী, আহমেদ ইলিয়াস, আর শামীম যামানভীর কবিতা অনুবাদ করেছেন।
এই বইতে আমি এমন উর্দু গল্পকারদের গল্প বেছে নিয়েছি যারা ভারতবর্ষ ভাগের পরে পূর্ব-বাংলায় স্থায়ীভাবে এসেছিলেন এবং এখানেই মৃত্যু বরণ করেছেন। কিছু লেখক এই দেশেই জন্ম গ্রহণ করেছেন এবং এখানেই বসবাস করছেন। তাদের গল্পের উপাদান এই দেশের মানুষ ও মাটি, সুখ আর দুঃখ, হাসি আর কান্না এবং আনন্দ ও বেদনা। যদিও বাংলা ভাষায় উর্দু গল্পের অনেক সংকলন আছে কিন্তু শুধু বাংলাদেশী উর্দুভাষী লেখকদের গল্পের সংকলন কোনদিন প্রাকাশিত হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই। এই অনুবাদের দ্বারা উর্দুভাষী গল্পকারদের মন, মনন এবং জীবন ও সমাজের প্রতি তাদের আচরণ জানার সুযোগ ঘটবে। আশা করি এই ছোটগল্পের সংকলনটি সমাদৃত হবে।
আগে ‘বাংলাদেশের উর্দু ছোটগল্প’ দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছিল। এবার প্রকাশকের পরামর্শক্রমে দুই খণ্ডকে একত্রিত করে এক খণ্ডে প্রকাশ করা হলো। এ সংকলনে একটি নতুন গল্পও সংযোজন করা হয়েছে।
আমি কৃতজ্ঞতা জানাই গল্পবিষয়ক মাসিক পত্রিকা ‘গল্পকার’-এর সম্পাদক জনাব মুহাম্মদ মহিউদ্দিনকে যার উৎসাহে আমি এই অনুবাদ করতে আগ্রহী হয়েছিলাম এবং তিনি সব অনূদিত গল্প ‘গল্পকার’-এ ছেপেছেন। এই ভূমিকা লেখার জন্য আমি উর্দু কবি মরহুম আহমেদ ইলিয়াসের ফেসবুক পোষ্ট থেকে তার লেখার কিছু অংশবিশেষ নিয়েছি। আমি তার আত্মার কাছে কৃতজ্ঞ। তা ছাড়া আমি আমার বোন শাবানা, রেজওয়ানা এবং সাদাফকে ধন্যবাদ জানাই, তারা সব সময় আমাকে উৎসাহ দিয়েছে। আমি যদি আমার বন্ধু শাহজাদ মুরাদের কথা না বলি তাহলে অন্যায় হবে, সেই একমাত্র ব্যক্তি যে আমার যে কোন লেখা মন দিয়ে পড়ে এবং উৎসাহ দেয়।
সবশেষে আমার স্ত্রী সালমা আক্তার হেনা-কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ, সে আমার কাঁচা হাতের লেখাকে মনোযোগ দিয়ে পড়েছে এবং উপযুক্ত পরামর্শ দিয়েছে। বইয়ের যে কোন ভুল ভ্রান্তির জন্য আমি একা দায়ী এবং আশা করি এই ভুলত্রুটি পাঠকরা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
হাইকেল হাশমী, ধানমণ্ডি, ঢাকা
২৬/০১/২০২৫

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “বাংলাদেশের উর্দু ছোটগল্প”

Your email address will not be published. Required fields are marked *