Sale!

কমনওয়েলথ পুরস্কারপ্রাপ্ত ছোটগল্প খণ্ড-৩

Original price was: ৳ 400.00.Current price is: ৳ 280.00.

Description

কমনওয়েলথ পুরস্কারপ্রাপ্ত ছোটগল্প খণ্ড-৩
কমনওয়েলথ পুরস্কারপ্রাপ্ত ছোটগল্প খণ্ড-৩

কমনওয়েলথ-পুরস্কারপ্রাপ্ত-ছোটগল্প-খণ্ড-৩

আমার মা পাত্তু
সরস্বতী এম. মানিককাম

আমাদের জীবনে আমার মা পাত্তুর অনুপস্থিতি যেন তার অশেষ মেহেরবানি, যার জন্য আমার বাবা আর আমি, খানিকটা, এবং ঠাকুমা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ ছিলেন। পাত্তু মাসে একবার ঠাকুমার কাছ থেকে তার পাওনা ভাতা নিতে আসেন। তখন ভাঁড়ারঘর লুট করেন, বাবাকে অভিশাপ দেন আর আমার কানে চটাস চটাস করে চড় মারেন। তিনি চলে গেলে আমরা সবাই এক সাথে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলি, কেবল ঠাকুমা ছাড়া, তিনি গোপনে চোখের জল ফেলেন, কারণ মেয়েটা যে তার কাছে থাকে না।
যখন পাত্তু নেই, তখন আলো আছে। জীবনে জম্পেশ মজা আছে: সাইকেলে প্যাডেল মেরে মামবাং শহরের সেরা কুয়ায় তেউ নুডলসের খোঁজে বন্ধুদের নিয়ে খাবার দোকানে ঢুঁ মেরে বেড়ানো; আহমাদের বাড়ির সামনে সিমেন্টের চাতালে ব্যাডমিন্টন খেলা; বন্ধুদের সাথে আমোদ-ফুর্তি শেষে রুবিয়ার সাথে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরে যাওয়া, অন্য ছেলেরা যেমন—ওং সেং চে, মনোহরণ, রাজু আর আব্দুল্লাহ, যারা সব আমারই মতো ফ্যান্টাসি নিয়ে ঘুরে, পাগলাটে ধরনের; ওদের সাথে মি. গোহ’র বাড়ির গাড়িবারান্দায় একত্রিত হই, কথাবার্তা বলি, হাসাহাসি করি, কুয়াচি খাই কমলার রসের সাথে। এছাড়া সপ্তাহে দু’বার আমার বাড়ি থেকে কয়েক ঘর পরে সুন্দরী মাসির কাছে কর্নাটকের গান শিখি। পাত্তু চেষ্টা করেন আমার গানের ক্লাস বন্ধ করতে, তবে সফল হননি, এক্ষেত্রে তার যুক্তিটা হলো ওরা আমাকে ‘চালচুলোহীন ভিক্ষুক গোছের কাউকে বিয়ে করার’ বিষয়টা মাথায় ঢুকিয়ে দেবে। এ শহরের দু’একটি বাড়ির মধ্যে সুন্দরী মাসির বাড়ি অন্যতম, যে বাড়িতে পাত্তুকে কখনও নিমন্ত্রণ করা হয় না। পাত্তু না থাকলে আমি ঠাকুমার এবড়ো-থেবড়ো সেলাই করা হাতে তৈরি সেমিজ পরার বদলে দোকান থেকে কেনা ব্রা পরে বাইরে যেতে পারতাম। ওই সেমিজগুলো আমার স্তনদুটো চিড়েচ্যাপটা করে দেয়। পাত্তুর জোরাজুরিতে ওইসব সেমিজ পরা আমি প্রচণ্ড ঘৃণা করি।
ঠাকুমার ঘরের আলমারিতে আমার মা-বাবা’র সাদা কালো বাঁধাই করা একটা ছবি আছে। ছবিটা ১৯৫০ সালে তাদের বিয়ের পর তোলা। একজন চীনা লোক আর ভারতীয় নারী বিয়ের পোশাক পড়া; বাবাকে দেখাচ্ছে স্বস্তা বাজেটে তৈরী সিনেমার সাধারণ চেহারার নায়কদের মতো, আসল নায়ক না পেলে যেমনটি হয়। বাবার চেহারায় বিধ্বস্ত ভাব আর ক্যামেরার দিকে কাঠ কাঠ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকা সত্ত্বেও একটা সূক্ষ্ম সৌন্দর্যের আভা দেখা যাচ্ছে। তার ধুসর হয়ে যাওয়া চুল কপাল থেকে টেনে পিছনের দিকে আঁচড়ানো হয়েছে, চুল কাঁধ অবধি নেমে এসেছে। তিনি কানে মোটা স্বর্ণের দুল পরছেন, গায়ে সাদা শার্ট, ধুতি আর পায়ে কালো চামড়ার জুতো। তিনি হাসছেন না। আমার মা পাত্তু তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। পাত্তুর দেহাবয়ব ভাস্কর্যের মতো, চোখের নিষ্পাপ মায়া আর ঠোঁটে অবজ্ঞাভাব ঝুলে আছে। পড়নের ভারী কাঞ্জিপুরম রেশমি শাড়িটি, তার স্ফিত উদর ঢাকতে পারেনি। একটা হাত নিতম্বের ওপর রাখা; অন্যটি, বেশ নির্লজ্জভাবে সে স্বামীর কাঁধের ওপর রেখেছে। ছবিতে তার প্রাণশক্তি, চঞ্চলতা অনুরণিত হচ্ছে। তাকে চৌদ্দ বছরের বালিকা নয়, বরং পূর্ণবয়স্ক একজন নারী বলে মনে হচ্ছে।

বিখ্যাত ভারতীয় চাঁ এবং যলখাবার
কৃতিকা পান্ডে

কালো টিপ পড়া মেয়েটি জানে ওর সাদা টুপি পড়া ছেলেটির দিকে তাকানোর কথা নয়, তবু ও তাকিয়েছে। ছেলেটি টুলের ওপর বসে অস্থিরভাবে নড়াচাড়া করছে। সে হাতের চায়ের কাপটি দোলাচ্ছে। মেয়েটি চায়ের সাথে বিনে পয়সায় দেয়া এলাচের সুঘ্রাণ পাচ্ছিল। ওর বাবা যাতে টের না পায়, সে জন্য ও অবশিষ্ট কয় দানা এলাচ গিলে ফেলেছে। ওর গোঁফওয়ালা চায়ের দোকানি বাবা, ক্যাশ-কাউন্টারে টাকার বাক্সের সামনে বসে বসে কটন বাড দিয়ে কান পরিষ্কার করছেন। মেয়েটি সসপ্যানের ফুটন্ত চায়ে ওপর থেকে মুখ উঠিয়ে, নতুন কাস্টমারদের দেখার ছলে আদতে ছেলেটির খোঁচা খোঁচা দাড়ি ওঠা থুতনি, আর তার ঘাড়ের ঘুড়ি-আকৃতির জন্মদাগ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে।
ছেলেটি অবশ্য রাস্তায় সাঁই সাঁই করে চলে যাওয়া গাড়িগুলো দেখছে। মাঝেমধ্যে ছেলেটির চোখে পড়ে মেয়েটি আসলে তার দিকে তাকিয়ে আছে আর তাতে তার কান বারবার লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। এমনই এক মুহূর্তে মেয়েটি আর ছেলেটি উপলব্ধি করে ওদের এক্ষুণি পরস্পরের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিতে হবে, তবে ওরা যেখানেই যাক না কেন একে অপরের কাছ থেকে দৃষ্টি সরাতে পারছে না।এখন সেপ্টেম্বর মাস। ফেরিওয়ালা টমেটোর টুকরি নিয়ে আসে। ওগুলোর দাম বেশ চড়া, আর অবিশ্বাস্য রকমের লাল। মেয়েটির বাবা ওকে দুই কিলো টমেটো কিনতে বলে।এখন সেপ্টেম্বর মাস। ফেরিওয়ালা টমেটোর টুকরি নিয়ে আসে। ওগুলোর দাম বেশ চড়া, আর অবিশ্বাস্য রকমের লাল। মেয়েটির বাবা ওকে দুই কিলো টমেটো কিনতে বলে।

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “কমনওয়েলথ পুরস্কারপ্রাপ্ত ছোটগল্প খণ্ড-৩”

Your email address will not be published. Required fields are marked *