Description
তাকওয়া প্রথম খন্ড
কুরআনের পরশে জীবন
শুরু করছি আল্লাহ্র নামে- ঐ আল্লাহ যিনি অতিশয় মহান, অতিশয় ক্ষমা ও রাহমাতের অধিকারী। আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও একা। সমস্ত প্রশংসার, সকল মর্যাদার সব গৌরবের, সমস্ত আনুগত্যের, সব কোরবানীর সব যিহাদের, ভালবাসার, ভাললাগার, সম্মানের, বন্ধুত্ব ও বন্ধনের আল্লাহ একমাত্র হকদার ও একমাত্র দাবীদার। একক শক্তিতে, একক ইচ্ছায় ছয় দিনের মধ্যে সমগ্র দুনিয়া ও আকাশ সমূহ এবং তার ভিতরে যা কিছু দৃশ্য ও অদৃশ্য জিনিসের ও মানুষের স্রষ্টা, মানুষের মালিক, মানুষের প্রতিপালক, বিচার দিনের বিচারপতি আমার রাব্বুল আলামীনের নামে তাঁরই অনুমতি, তাঁর কাছ থেকে সাহায্য হিকমাত, জ্ঞান ও হিদায়েত কামনা করে। ইয়া আল্লাহ! সাহায্য করো তোমার এক ক্ষুদ্র তুচ্ছ গোলামের দ্বারা এই কুরআনের শুরু ও শেষ করতে, সাহায্য করো নেক হায়াতের দ্বারা, সুস্থতার দ্বারা, জ্ঞানের দ্বারা, তোমার রাজী খুশীর দ্বারা, তোমার দৃষ্টির ভিতরে রেখে, শুরু ও শেষ করতে অনুমতি দাও। সর্বপরি কবুল করো, দয়া করে গ্রহণ করো, দয়া করে তোমার বান্দাদের কাছে গ্রহণীয় করে দাও। তারা যেন বুঝতে পারে এমন করে লিখতে দাও। তারা যেন জানতে পারে কুরআন তোমার পাঠানো শুধু কিতাব নয়- এটা তোমার পাঠানো সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার, আলো, শিফা ও সুধার সুখবর সমগ্র মানব জাতির জন্য। কেউ এর বাইরে যেন না থাকে। কুরআন হলো আগুন থেকে নিরাপদ থাকার উপায়। জীবনের সৌরভ ও গৌরবের চাবিকাঠি। এ উপহার শুধু মুসলিমের জন্য না- এই কুরআনের দ্বারা মানুষ বুঝতে পারবে সে কার দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে, কে তাকে শাস্তি দিতে পারে বা কে নিরাপত্তা দিতে পারে, কে সব দিয়ে, আবার সব কেড়ে নিতে পারে। কে সব দিয়ে সব অটুট রাখতে পারে এবং সেই আল্লাহ্রই কাছ থেকে এসেছে এই কুরআন। ও মানব জাতি তোমার স্রষ্টা তোমাকে বানিয়ে বা দুনিয়ার মত এক জায়গায় পাঠিয়ে একা ছেড়ে দেন নাই। ও মানুষ তুমি কত দিনে মায়ের গর্ভে থেকে পূর্ণতা লাভ করে দুনিয়াতে আসবে আবার কবে কিভাবে চাঁদে যেয়ে অবতরণ করবে, কবে তোমার মৃত্যু, কিভাবে এই দুনিয়াতে বসবাস করবে, কি পোষাক পরবে, কি খাবার খাবে, আর খাবে না। কতটুকু রাখবে নিজের জন্য কতটুকু ব্যয় করবে তোমার স্বজন, আপনজন, প্রিয় ও অপ্রিয় জনের জন্য। ও মানুষ তোমার জীবন সাথী কাকে করবে বা করবে না, তোমার সন্তানকে তোমার জন্য আগুন বানাবে, না চোখের শান্তি ও সাদকায়ে জারিয়া অর্থাৎ আল্লাহ্র পছন্দের উৎস, তোমার সম্পদ কি ভাবে অর্জন করে কি পথে ব্যয় করবে, সম্পদকে স্বজনের মাঝে কিভাবে ভাগ করবে, প্রতিবেশী ও সাহায্যকারীদের উপরে তোমার কি করণীয় এবং তারা তোমার জন্য কি করবে। জীবনের ছোট থেকে বড় ব্যক্তিগত, পরিবারগত, সমাজ ও সংসারগত কিংবা অর্থনীতি বা রাজনীতি বা রাজ্যনীতি যেটাই মানুষের প্রশ্ন হোক না কেন- মানুষের মালিক যে কিতাব পাঠিয়েছেন মানুষের বুঝবার জন্য, বুঝে জীবনকে গুছানো, সাজানো ও সুন্দর করে আবার একটা নির্দিষ্ট কাল পরে তাঁকে সেটার হিসাব সহ ফেরত বুঝিয়ে দেবার জন্য সেটাই হলো কুরআন। তাই কুরআন বুঝার জন্য শর্ত না মুসলিম হওয়া। দরকার শুধু এমন একটা অন্তর যে অন্তর কৃতজ্ঞ, যে অন্তর জানতে চায় কে তাকে পাঠালো, কেন তাকে পাঠালো এবং যে অন্তর কর্তব্য পালনে অলস না। অজানার থেকে জানায় এসেছে কেন ও কতক্ষণের জন্য, বুঝতে চায়। যে অন্তর জানা থেকে আবার অজানায় ফিরে যাবে এ বিশ্বাস নিয়ে চলে জীবনের পথগুলি। মানুষ যখন একটা ঘড়ি বা কোন অন্য ধরনের ম্যাসিনারি কিনে তার সাথে একটা লিটারেচার বা পরিচয় পত্র থাকে। ওষুধের বেলায় তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও লেখা থাকে। সবাই তা পড়ে না বা মাথা ঘামায় না; কিন্তু যে মানুষটা সচেতন, জানতে আগ্রহী- সেই সেটার ভাজ খুলে পড়বে এবং যা করণীয় তা করবে। এ কুরআন হলো জীবনের ও মরনের পরের যে চিরস্থায়ী জীবনের ওয়াদা আল্লাহ তাআলা করেছেন তার লিটারেচার, এটা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈণ, ইহুদী, খৃষ্টান ও মুসলিমের জন্য সমভাবে প্রয়োজনীয়। যে মানুষটা ইসলামের বাইরে আছে সেও এই কুরআন অনুসরণ করলে জীবনের সব কটা বন্ধ দরজার চাবি পেয়ে যাবে, জীবনের রাজপথ বা গলিপথ কোথায় যায় জানতে পারবে। এই কুরআনের দ্বারা ভাগ্যবান মানুষটা দুনিয়ার জীবনে সফল হয়ে ফিরে যাবে তার স্রষ্টার কাছে খুশী মনে যখন কিনা তার স্রষ্টাও তার সঙ্গে খুশী থাকবে ক্ষমা ও পুরস্কারের দরজা খুলে, দুনিয়াতে যে ছিল গোলাম, তাকে বন্ধু ও সম্মানিত অতিথি হিসাবে আপ্যায়ন করার জন্য। এই কুরআন জীবন এবং মনকে দেয় প্রশস্ততা, দূর করে সংকীর্ণতাকে, ঘৃণাকে পরিণত করে ভালবাসায়, সন্দেহকে এনে দেয় বিশ্বাস, শত্রুকে বানায় বন্ধু, রাগীকে দেয় ক্ষমার আনন্দ, অহংকারীকে দেয় বিনয়ের গৌরব। তাই এই কুরআন লুকানোর জিনিষ নয় ………… নাহি কোন বিশেষ জাতি বা সম্প্রদায়ের জন্য। এই কুরআন হলো সূর্যের আলো, মেঘের ছায়া, বৃষ্টির বর্ষণ, পানির শীতলতা, বাতাসের আমেজ, গাছের ফল, বাগানের ফুল, ঘাসের সবুজতা, চাঁদের মধুরতা, তারার ঝলমল, অপর দিকে রোগের প্রচণ্ডতা, রোদের তীব্রতা, মাটির ক্ষরা, নদীর ভাংগন, বন্যার ক্ষয়ক্ষতি, ভূমিকম্পন ও ভূমিধংসের মত। মোটকথা জীবন ও জীবনের সাথে জড়িত দুনিয়ার সব সুখ-দুঃখ যেমন সব জাতি নির্বিশেষে মানুষ ভোগ করে, এই কুরআন তেমনি এসেছে সব মানুষের জীবনের জন্য। তাই আমার আল্লাহ্র কাছে এই দোয়া, এই আবেদন, এই মিনতি, এই আকুতি, জানিয়ে শুরু করেছি সেই মহান স্রষ্টার নামে যিনি এই কুরআনের মালিক, রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠাদাতা “ইয়া আল্লাহ এই কুরআন যাদের জন্য পাঠিয়েছো তারা যেন বুঝতে পারে তোমার আদেশগুলি এবং মেনে চলতে পারে তোমার পছন্দকে, তোমাকে ভালবাসতে শিখে। তোমাকে ভয়ের মাধ্যমে তারা যেন জীবনের নিরাপত্তা খুজে পায়, তোমাকে ভাললাগার মাধ্যমে তারা যেন পায় অতীব ও দুর্লভ আনন্দ।
Reviews
There are no reviews yet.