Description
নিষিদ্ধ বই
আঙ্কল টম্স কেবিন
জাবেদ আমিন
বিশ্বব্যাপী বই বিক্রির নিরিখে দেখা যায়, ১৯ শতাব্দীর সবচাইতে বিক্রয় সফল উপন্যাস এবং একই শতাব্দীতে প্রকাশিত সমস্ত বইগুলোর মাঝে দ্বিতীয় সফলতম বইয়ের নাম ‘আঙ্কল টম্স কেবিন’; বিক্রয় তালিকায় বাইবেল এর পরপরই রয়েছে এই বইয়ের অভূতপূর্ব স্থান। এই উপন্যাস যার যাদুকরী হাতে লেখা, তিনি হচ্ছেন হ্যারিয়েট বিচার স্টো, আমেরিকার অন্যতম সফল নারী লেখক। তাঁর এই লেখা ছিল তৎকালীন ক্রীতদাসপ্রথার বিরুদ্ধে, প্রকাশিত হয় ১৮৫২ সনে যা আমেরিকার গৃহযুদ্ধের পটভূমি রচিত করেছিল বলে কথিত আছে।
আমেরিকার কানেক্টিকাটে জন্মগ্রহণ করা স্টো পেশাগত জীবনে কলেজ শিক্ষক ছিলেন, পাশাপাশি ছিলেন দাসপ্রথার ঘোর বিরোধী উদ্যোগী এক কর্মী। তিনি তাঁর এই উপন্যাসে আঙ্কল টমের চরিত্রকে এক জীবনের ভুক্তভোগী নিগ্রো এক ক্রীতদাস হিসেবে চিত্রায়িত করেছেন যাকে ঘিরে অন্য চরিত্রগুলো আবর্তিত হয়েছে। প্রচণ্ড আবেগ তাড়িত এই গল্পে দাস ব্যবস্থার প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে শিল্পীর নিখুঁত আঁচড়ে এবং সবকিছু ছাপিয়ে যে ‘খৃস্টীয় ভালোবাসা’ যার ভাবার্থÑ ‘পরস্পরের প্রতি সদয় আচরণ ও একসাথে মিলে মিশে ভাল থাকার যে মনোভাব’-এই মনোভাবটুকু দিয়েই যে এই দাসপ্রথার মতো এক নিন্দনীয় ব্যবস্থাকে সমূলে উৎপাটন এবং জয় করা যায়, সেই মূল স্পিরিটটাই ফুটে উঠেছে এই কাহিনীর মধ্য দিয়ে।
অ্যানিম্যাল ফার্ম
জাবেদ আমিন
জগতবিখ্যাত বৃটিশ লেখক জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিম্যাল ফার্ম’ লেখা হয় নভেম্বর ১৯৪৩ থেকে ফেব্রুয়ারি ১৯৪৪ এর মধ্যে। সেই সময়টায় ইংল্যান্ডের সাথে সোভিয়েত রাশিয়ার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ব জোট কর্মসূচি চলছিল এবং জোসেফ স্ট্যালিনকে ব্রিটিশ জনগণ অত্যন্ত উচ্চ মর্যাদায় দেখত তার বীরত্বপূর্ণ নেতৃত্বের ভূমিকায় যা ছিল অরওয়েলের খুবই অপছন্দের। অরওয়েল ছিলেন, ট্রটস্কি পন্থি, সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী এবং তৎকালীন রাশিয়ার স্ট্যালিনের শাসনামলকে তিনি ডাকতেন পাশবিক একনায়কতন্ত্র। ‘অ্যানিম্যাল ফার্ম’ লেখা হয়েছিল সোভিয়েত রাজনীতি বিরোধী ব্যাঙ্গাত্বক এক কাহিনীর পটভূমি নিয়ে, গল্পের মঞ্চ গড়ে উঠেছে অতীব সুন্দর প্রকৃতির মাঝে সবুজাভ এক চারণভূমিতে, এক পশু পাখির খামারে ঘটে যাওয়া এক অকল্পনীয় বিপ্লব নিয়ে যা রূপকথার মতই হতবাক করে সমস্ত পাঠক সমাজকে।
নামকরা সব ব্রিটিশ ও আমেরিকান প্রকাশনীগুলো একের পর এক এই পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে গিয়ে রাশিয়ার সাথে নিজ দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হওয়ার আশংকায় ফিরিয়ে দেয়। অবশেষে এটি প্রকাশ পায় ১৯৪৫ সালের ১৭ই আগস্ট ইংল্যান্ডে ‘ভিক্টর গোলাঞ্জ’ প্রকাশনী থেকে। প্রকাশের পর পরই এই বই সারা বিশ্বে পায় অভাবনীয় সফলতা। তবে প্রকাশনার পর পরই সোভিয়েত রাশিয়াসহ অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক দেশ সমূহে এই বই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ২০০২ সালে নিষিদ্ধ করা হয় আরব আমিরাতের স্কুলসমূহে, নর্থ কোরিয়ায় এখনো পর্যন্ত এই বই নিষিদ্ধ এবং ভিয়েতনামে এই বই সেন্সর করার পর প্রকাশ পেয়েছে।
কি এমন আছে এই ১১২ পাতার বইটিতে! সবুজ সেই চারণভূমির সেই ‘ম্যানর ফার্মে’ এই অনবদ্য কাহিনি গড়ে উঠেছে দুই শুকরের দুর্দান্ত প্রতাপ নিয়ে যার মধ্যে একজনকে আঁকা হয়েহে জোসেফ স্ট্যালিনের আদলে, অন্যজন লিয়ন ট্রটস্কির।
টাইম ম্যাগাজিন এই বইটিকে ১৯২৩-২০০৫ সালের মধ্যে প্রকাশিত শ্রেষ্ঠ ১০০ বইয়ের মধ্যে একটি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। মডার্ন লাইব্রেরির লিস্ট অফ বেস্ট ‘২০ঃয পবহঃঁৎু ঘড়াবষং’ এর মাঝে এই বই স্থান পেয়ে ৩১ নম্বরে। ১৯৯৬ সালে এই বই জয় করেছে রেট্রোস্পেকটিভ ‘হিউগো এ্যাওয়ার্ড’। ১৯৫৪ সালে বানানো হয়েছিল প্রথমবার ‘এনিমেটেড ফিচার’ সিনেমা এই কাহিনী নিয়ে। ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয়বার চলচ্চিত্র রূপ পেয়েছিল টিভি লাইভ একশন ভার্সনে। রেডিওতে হয়েছিল এর নাট্যরূপ, প্রতিটি মিডিয়াতেই কেড়ে নিয়েছে শ্রোতা দর্শকদের বিশেষ মনোযোগ।
ললিতা
জাবেদ আমিন
ললিতা উপাখ্যান
১৯৫৫ সালে ফ্রান্সে প্রথম প্রকাশ পায় দিমির নবোকভের লেখা তুমুল সাড়া জাগানো উপন্যাস ‘ললিতা’। পরবর্তীতে লেখক আমেরিকায় প্রকাশ করেন ১৯৬৭ সালে। তখন আমেরিকার বেশ কিছু নামকরা লাইব্রেরি এই বই নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। খুব অল্প সময়েই এই উপন্যাস ক্লাসিক পর্যায়ে উঠে আসে মূলত এর চমক লাগানো নিষিদ্ধ বিষয়বস্তু নিয়ে। এক মধ্যবয়ষ্ক সাহিত্যের অধ্যাপক হামবার্ট হামবার্ট ১২ বছর বয়েসি এক কিশোরী-‘ডলোরেস হেইজে’র প্রেমে মত্ত হয়ে তাকে পাওয়ার জন্যে তার মা’কে বিয়ে করেন। সৎ বাবা সেজে সে ছলেবলে মেয়ের সাথে যৌন সম্পর্কের জাল বিছিয়ে যায়। ‘ললিতা’ নামটি অধ্যাপকের নিজের দেয়া ডাক নাম যে নামে সে ডলোরেসকে ডাকতেন সংগোপনে।
টাইম ম্যাগাজিনে ‘ইংরেজিতে লেখা বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম ১০০ উপন্যাসের মাঝে ঠাঁই করে নিয়েছে ‘ললিতা’। এই উপন্যাস নিয়ে প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন প্রখ্যাত নির্মাতা স্ট্যানলি কুবেক ১৯৬২ সালে, পরবর্তীতে আবারো সিনেমা বানিয়েছেন আদ্রিয়ান লিন ১৯৯৭ সালে। বহুবার এই গল্প নিয়ে মঞ্চস্থ হয়েছে দুটি অপেরা ‘শো’, দুটি ব্যালেট, ব্রডওয়ে মিউজিকে কেড়েছে নজর।
মূল গল্পের সারাংশ : (১)
গল্পের শুরুটা হয় মনস্তত্ব বিষয়ক বইয়ের সম্পাদক- জন রে জুনিয়র (পিএইচডি) এর ভূমিকা দিয়ে। তিনি জানান, এই গল্প একটি আত্মজীবনীমূলক লেখা যার নামকরণ করা হয়েছে ‘এক বিপত্নিক শ্বেতাঙ্গের স্বীকারোক্তি’- লিখেছেন এক সাহিত্যের অধ্যাপক যিনি আমেরিকান এক কারাগারে তাঁর বিচারের রায়ের অপেক্ষায় থেকে থেকে অতি সম্প্রতি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
Reviews
There are no reviews yet.