Sale!

হাইদি

Original price was: ৳ 600.00.Current price is: ৳ 420.00.

Description

হাইদি

হাইদি

ভূমিকা

হাইদি প্রাণোচ্ছল এক কিশোরীর গল্প। হাইদির বাবা-মা নেই, তাই সে চলে এসেছে আল্পস পর্বতের কোলে দাদার কাছে। পাহাড়ের উপর ছোট্ট গ্রাম মেইনফিল্ড। শহর থেকে অনেক দূরে সবুজ বনানী ও মুক্ত বাতাসে আলোড়িত দাদার ছোট খামার বাড়ি। পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে লাল নীল ফুলের সমারোহ। ভেড়া ও বন্য ছাগলেরা পাহাড়ে পা রেখে ঘুরে বেড়ায়। সূর্যের আলো পাখির কিচির মিচির বিষণ্ন দাদার মন ভরিয়ে দেয়।
হাইদি প্রাণোচ্ছল ও সংবেদনশীল। দ্রুতই তার বন্ধুর পরিধি বেড়ে যায়। ছাগল, ভেড়া, পশুপাখি চারপাশের মানুষ ও বিষণ্ন দাদা ও হাইদির ভেতর প্রাণ খুঁজে পান। আনন্দময় হয়ে উঠে চারপাশ। পুরো গল্পে পাঁচ বছরের কিশোরী হাইদি সবার মুখোমুখি হয়েছে উজ্জ্বল সূর্যরশ্মির মতো। হাইদির ছোঁয়ায় দাদা ও ক্লারার জীবনে এলো পরিবর্তন। যদিও একসময় অপরিচিত পরিবেশে হাইদির মনোজগতে যে মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছিল তা লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন অত্যন্ত গভীরভাবে। প্রকৃতির সৌন্দর্য ও শক্তির উপলব্ধি ও সুইস আল্পস পর্বতের মহিমান্বিত পরিবেশ হাইদি বইটিকে প্রাণবন্ত করেছে। সুইস লেখিকা জোহানা স্পাইরির এক অমর সৃষ্টি হাইদি। শিশু মনের মনস্তাত্ত্বিক অন্তর্দৃষ্টি, হাস্যরস, শিশুসুলভ আনন্দ এবং দুঃখের ভেতর প্রবেশ করার ক্ষমতা বইটিকে আর্কষণীয় করে তুলেছে। জার্মান ভাষায় হাইদির প্রথম প্রকাশ ১৮৮০-৮১ সালে।
ইংরেজিতে অনূদিত হয়ে হাইদি প্রকাশিত হয় ১৮৮৪ সালে। প্রায় দেড়শত বছরেও হাইদির জনপ্রিয়তা কমেনি। বলা হয়ে থাকে আল্পস পর্বতের ‘সুর’ নামক স্থানের হাইদি সেউলার নামের এক মেয়ের দুঃসাহসী জীবনকেই ফুটিয়ে তুলেছিলেন লেখিকা জোহানা স্পাইরি। লেখিকা আল্পস পর্বতের গায়ে যে বাড়িতে বসে বইটি লেখা শুরু করেছিলেন সেই বাড়িটি এখনও আছে। বাড়িটি ঘিরেই পর্বতের মাথায় গড়ে উঠেছে ‘হাইদি গ্রাম’। প্রতিবছর হাজার হাজার শিশু ও পরিব্রাজক গ্রামটি পরিদর্শনে যান। পাঁচ বছরের শিশু হাইদি আল্পস পর্বতের যে পথ ধরে দাদার বাড়ি এসেছিল, আমিও সেই পথ ধরে একশত তেত্রিশ বছর পর বাড়িটি এবং বাড়ির আশপাশের ট্রেইলগুলো দেখতে গিয়েছিলাম। বাড়ির চত্বরে পাহাড়ি ছাগলের খোঁয়াড়।
বাড়িটি এখন যাদুঘর। বাড়ির ভেতর হাইদির পড়ার ঘর। ছোট ছোট চেয়ার টেবিল, হাইদির শয়ন কক্ষ, আর একটি ঘরে একটি হুইল চেয়ার যেটি ক্লারা ব্যবহার করতো। রান্নাঘর পুরোনো থালা বাসনে সাজানো। বাড়ির আঙিনায় দাদার কাঠের কাজের হাতুড়ি, বাটালি। বাড়ির ডান দিকেই হাইদি ট্রেইল। আঁকাবাঁকা সরু পথ পাহাড়ের উপর উঠে গিয়েছে। বছর কয়েক আগের কথা।
আমি তখন জুরিখ রাইটার্স হাউজ ও ট্রান্সলেশান হাউসের সাথে একটি কর্মশালায় যুক্ত। সে সময় ‘হাইদি’ জার্মান থেকে বাংলা অনুবাদের পরিকল্পনা হতে নেয়া হয়। জার্মান ভাষায় আমার দক্ষতা না থাকায় জার্মানপ্রবাসি লেখক আবদুল্লাহ আল-হারুন ভাইয়ের স্মরণাপন্ন হই। কিন্তু সময় ও সুযোগে কাজটি করা হয়ে ওঠেনি। জার্মানপ্রবাসি বোহেমিয়ান লেখক আবদুল্লাহ আল-হারুন বিচিত্র অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও প্রাণবন্ত মানুষ। অভাবনীয় তাঁর স্মৃতিশক্তি। স্মৃতি ও অভিজ্ঞতার আলোয় তিনি রচনা করেছেন বাংলা সাহিত্যের যুগান্তরকারী কয়েকটি বই। তিনি পেশাগত কারণে বিশ্বের খ্যাতনামাদের মুখোমুখি হয়ে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তা নিয়ে লিখেছেন ‘রাজদর্শন’ নামে একটি আলোচিত বই। লিখেছেন আত্মজৈবনিক উপন্যাস ‘বেলভেদ্রের বিনোদিনী’। মৃত্যুর দুয়ারে মানবতার জয়গান গাওয়া ও মৃত্যুগামী মানুষের সঙ্গ উপলদ্ধিমূলক বই ‘জীবনমরণের সীমানা ছাড়ায়ে’, মৃত্যুপথযাত্রী জুলির শেষ দীর্ঘশ্বাস ও ছায়ার মতো জুলির অবয়বের লেখককে জড়িয়ে ধরার চুম্বন ও আলিঙ্গনের আবেশে রচিত ‘অঙ্গবিহীন আলিঙ্গন’ বাংলা সাহিত্যে এক উল্লেখযোগ্য সংযোজন।
দীর্ঘ সময় পর আবদুল্লাহ আল-হারুন ‘হাইদি’র অনুবাদ সম্পন্ন করলেন। মূল ভাষা থেকে যে কোনো ক্লাসিক সাহিত্যের অনুবাদ ভিন্নতা ও বিশিষ্টতার দাবি রাখে। আবদুল্লাহ আল-হারুন অনূদিত ‘হাইদি’ বাংলা সাহিত্যে এক উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।

লিয়াকত হোসেন
লেখক, অনুবাদক
প্রাক্তন সদস্য, সুইডিশ রাইটার্স ইউনিয়ন
সুইডেন।

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “হাইদি”

Your email address will not be published. Required fields are marked *