শরিফুল যখন নবনীর সাথে প্রেম করেছিল বা প্রেমে পড়েছিল তখন নবনীর বাবার সাথে শরিফুলের পরিচয় হয় নাই। এটা কোন ব্যাপার না। বরং এটাই স্বাভাবিক। মেয়ের সাথে প্রেম
করতে গেলে মেয়ের বাবার সাথে পরিচয় থাকতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নাই। কিন্তু প্রেমে পড়ার পর মানে সম্পর্কটা একটা টান টান অবস্থায় যাওয়ার পর মেয়ের বাপদের বাগড়া দেয়াটাই প্রচলিত প্রথা। পাত্র কী করে, পাত্রের চৌদ্দগুষ্ঠির পরিচয়, পাত্রের ভূত ভবিষ্যৎ, স্বভাব চরিত্র মানে কোন প্রকার আলুর দোষ আছে
কিনা সবই মেয়ের বাপদের জানতে ইচ্ছে করে।
দরজায় কয়েকবার টোকা পড়ার শব্দে মাঝরাতে চোখে লেগে আসা ঘুম ভেঙ্গে গেল। এমনিতেই সপ্তাহ ধরে নিয়মিত রাতে ঘুম হচ্ছেনা আর এখন আসতে যাওয়া ঘুমটাই ছুটে গেল। জানালার টানা পর্দার আড়ালে করিডোরের বাতির আবছা আলো
ঘরে। মাহফুজ চোখ কচলে বালিশের পাশে থাকা মুঠোফোন দেখল। রাত দু’টো বেজে পঁয়ত্রিশ। পূনরায় দরজায় টোকা পড়ছে। মাহফুজ দরজার কাছে যাবে কি যাবে না ভাবছে। হোটেল ঘর।
বিছানায় ঢলে পড়া ঘুম নিয়ে নদীর মতো বয়ে চলে সুরভী। কী চমৎকার উষ্ণ সৌরভময় তার প্রবাহ! আফিম-এ ঢাকা পবর্তের পাশে, যখন আফিম ফুলে-ফুলে রঙিন, যখন কৃষেকরা
চাষ করে, যখন আফিম শুকায়, তখন তারাওতো নেশা করে। তাদেরও তো নেশা হয়। হয় কী? সুরভীর ঘুমে কী সেই নেশাঘোর ভর করে রয়েছে, আর তা মেখে রয়েছে পাশবালিশে, মাথার
কালো চুলে। নদী যেমন বেঁচে থাকে নদীরই ঢলনামা প্রবাহে, শাখা-প্রশাখা বিস্তারের প্রয়োজনে কেবল নয়।
ভো র হচ্ছে বুঝতে পেরে সুনন্দার মনে একটু একটু স্বস্তি ফিরে আসছে। সে রাতভর এক ধরনের আতঙ্কের মাঝে কাটিয়েছে তার এক কালের শ্বশুরবাড়িতে। অফিস ছুটি হলে সুনন্দা বনগাঁও লোকাল ধরে সন্ধ্যে সন্ধ্যে বাড়িতে পৌঁছে থাকে। মধ্যমগ্রামে বদলি হয়ে আসার পর থেকে সুনন্দা এটাই করে আসছে। কিন্তু ওদিন রমেশদার দোকানের কাছে আসতেই
শ্রাবণের বৃষ্টি শুরু। অগত্যা রমেশদার দোকানে আশ্রয় নেয়া। বনগাঁও লোকাল ধরতে হলে বৃষ্টির মাঝে দৌড়েও ট্রেন ধরা যাবে না
সমকলীন বাংলাসহিত্যে এক অনন্য নাম কথাশিল্পী দিলারা মেসবাহ। দীর্ঘ চার দশক পেরিয়ে তিনি লিখছেন গল্প-উপন্যাস ও শিশুতোস প্রন্থ। তাঁর লেখায় সুন্দর-সাবলিল আনন্দ আলোকে চিত্রায়িত হয়।
আমাদের বাঙালী মধ্যবিত্ত জীবনের টানাপোড়েন, ঘর-সংসার, মুক্তিযুদ্ধ এবং আমাদের যাপিত-জীবনের নানান খুটি-নাটি বিয়ষ যা আমাদের অনেকেরই দৃষ্টিগোচর হয় না। তার কথাসাহিত্যের নির্মানশৈলী, বিবরণ ও চিত্রায়ণ আমাদের বাংলাসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে নিজস্ত বৈভাবে। কথাশিল্পী দিলারা মেসবাহর জš§ ২৮ আগস্ট, ১৯৫০। পিতা তাসাদ্দুক লোহানী (শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক) মা-বদরুন নাহার লোহানী কণা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সাবেক সভাপ্রধান,
বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ। প্রকাশিত গ্রন্থ ৪০ টি। পুরষ্কার ও সম্মাননা ১৮টি।
কবি ও ঔপন্যাসিক বেন ওকরি ১৯৫৯ সালে উত্তর নাইজেরিয়ার মিন্নায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সালে পরিবারের সঙ্গে নাইজেরিয়ায় ফিরে আসার আগে তিনি লন্ডনে বেড়ে ওঠেন। তাঁর প্রথম দিককার কথাসাহিত্যের বেশিরভাগই নাইজেরিয়ার গৃহযুদ্ধে তিনি যে রাজনৈতিক সহিংসতা প্রত্যক্ষ করেছিলেন তার প্রতিফলন ঘটেছে। নাইজেরিয়া সরকারের অনুদান পেয়ে তিনি ইংল্যান্ডের এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য পড়ার সুযোগ পেয়ে নিজ দেশ ছেড়েছিলেন। আমি মূলত লিখি সত্যের জন্য, সৌন্দর্যের জন্য, ন্যায়বিচারের জন্য, পরিহাসের জন্য, উদ্ভাবনের জন্য, আনন্দের জন্য, বিশ্বকে পরিবর্তন করতে, কখনও রুখতে, কখনও প্রকাশ করতে, প্রশ্ন করতে, আবিষ্কার করতে